কারবালার প্রকৃত ঘটনা

সৌভাগ্যবান শহীদ রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দৌহিত্র হুসাইন বিন আলী রা. এর কারবালার প্রান্তরে শহীদ হওয়াকে কেন্দ্র করে অনেক ঘটনাই প্রসিদ্ধ রয়েছে। আমাদের বাংলাদেশের অনেক মুসলিমের মধ্যে এ বিষয়ে বিরাট বিভ্রান্তি রয়েছে। ‘‘বিষাদসিন্ধু’’ নামক একটি উপন্যাস পড়ে বা এর কিছু বানোয়াট ও কাল্পনিক কাহিনী শুনে সুন্নি মুসলিমগণও এ বিষয়ে ধুম্রজালে আটকা পড়েছেন। জাতির ভুল-ভ্রান্তি সংশোধনের জন্য আজ আমি এ বিষয়ে সঠিক ও গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য প্রকাশ করার কাজে অগ্রসর হতে বাধ্য হলাম। মূল বিষয়ে যাওয়ার আগে সংক্ষিপ্ত আকারে একটি ভূমিকা পেশ করতে চাই। মন দিয়ে ভূমিকাটি পড়লে মূল বিষয় বুঝতে সহজ হবে বলে আমার বিশ্বাস। আমি আরও বিশ্বাস করি যে, আমার লেখাটি পড়ে এ বিষয়ে অনেকের আক্বীদাহ সংশোধন হবে। আর যারা বিষয়টি নিয়ে সংশয়ে আছেন, তাদেরও সংশয় কেটে যাবে ইনশাআল্লাহ। ইমাম ইবনে কাসীর রহ. বলেন, প্রতিটি মুসলিমের উচিত রসূলুল্লাহ স. এর দৌহিত্র হুসাইন বিন আলী রা. এর কারবালার প্রান্তরে শহীদ হওয়ার ঘটনায় ব্যথিত হওয়া ও সমবেদনা প্রকাশ করা। তিনি ছিলেন মুসলিম জাতির নেতা ও ইমামদের অন্যতম। রসূল স. এর সর্বশ্রেষ্ঠ কন্যা ফাতেমা রা. এর পুত্র হুসাইন রা. একজন বিজ্ঞ সাহাবী ছিলেন। তিনি ছিলেন একধারে ইবাদত গুজার, দানাবীর এবং অত্যন্ত সাহসী বীর। হাসান ও হুসাইনের ফাযীলাতে রসূল স. থেকে একাধিক সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। অন্তর দিয়ে তাদেরকে ভালবাসা ঈমানের অন্যতম আলামত এবং নাবী পরিবারের কোন সদস্যকে ঘৃণা করা ও গালি দেয়া মুনাফেকির সুস্পষ্ট লক্ষণ। যাদের অন্তর ব্যাধিগ্রস্থ কেবল তারাই হুসাইন রা. বা নাবী পরিবারের পবিত্র সদস্যদেরকে ঘৃণা করতে পারে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আক্বীদাহ অনুযায়ী ইমাম হুসাইন বা অন্য কারও মৃত্যুতে মাতম করা জায়েয নেই। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হল মুসলিম জাতির বিরাট একটি গোষ্ঠী হুসাইন রা. এর মৃত্যুতে মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করে থাকে। যারা হুসাইনের মৃত্যু ও কারবালার ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি করেন, তাদের কাছে কয়েকটি প্রশ্ন করা খুবই যুক্তিসংগত মনে করছি। যে সমস্ত সুন্নী মুসলিম সঠিক তথ্য না জানার কারণে এ ব্যাপারে সন্দিহান ও বিভ্রান্তিতে আছেন তাদের কাছেও আমার একই প্রশ্ন। প্রশ্নগুলো ভালভাবে উপলব্ধি করতে পারলেই প্রকৃত ঘটনা বুঝা খুব সহজ হবে ইনশা-আল্লাহ।