সকল প্রশংসা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার জন্য। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর অগণিত শান্তির ধারা বর্ষিত হউক। বক্ষ্যমাণ বইটি প্রথিতযশা লেখক শেইখ আহমাদ ইবনু হাজার আলে বুতামী কর্তৃক সংকলিত আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের ধরণ ও প্রকৃতি স¤পর্কে চমৎকার একটি বই। লেখক এতে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের মৌলিক দিকগুলি অতি সংক্ষেপে, সহজভাবে, চমৎকার আঙ্গিকে ফুটিয়ে তুলেছেন। তিনি এই বইয়ে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের তিনটি ক্ষেত্র তুলে ধরেছেন। ১. প্রভুত্বের ক্ষেত্রে আল্লাহকে এক বলে বিশ্বাস করা; ২. ইবাদতের ক্ষেত্রে আল্লাহকে এক বলে বিশ্বাস করা; ৩. আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে তাকে এক বলে বিশ্বাস করা। বিশ্বাসের প্রথম ক্ষেত্রটিকে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে পৃথিবীর সকল মানুষই বিশ্বাস করে। মুষ্টিমেয় কিছু লোক ছাড়া, যারা সৃষ্টিকর্তায় অবিশ্বাসী তথা নাস্তিক বলে নিজেদের পরিচয় দিতে ভালবাসে। কিন্তু দ্বিতীয় প্রকারের ব্যাপারে মানুষ বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত। অনেকেই আল্লাহর ইবাদাতের পরিবর্তে দেব-দেবী, প্রতিমা-মূর্তির পূজা করে। কেউ বা করে গাছ, পাথর, নক্ষত্র, চন্দ্র-সূর্য ইত্যাদির পূজা। কেউ বা আবার আল্লাহর ইবাদতের পরিবর্তে তারই ইবাদতের উদ্দেশ্যে তারই সৃষ্টি জীবিত কিংবা মৃত মানুষ, জ্বিন ইত্যাদির উপাসনা করে। আর এই ধারা চলে আসছে প্রথম রাসুল নূহ আলাইহিস সালামের যামানা থেকে। অনেকে আবার গায়রুল্লাহর (আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো) উপাসনা করে না ঠিকই, তবে এই বিশ্বাস রাখে যে, সাধারণ মানুষ সরাসরি আল্লাহর কাছে যেতে পারে না, তার কাছে নিজের পাপ ক্ষমা চাইতে পারে না, বিপদ-আপদে সাহায্য চাইতে পারে না, কোন প্রয়োজনে তার কাছে সরাসরি কিছু চাইতে পারে না। উকিলের মাধ্যম ছাড়া যেমন কেউ আদালতে যেতে পারে না, তেমনই কোন অসীলা বা মাধ্যম ছাড়া সাধারণ মানুষ আল্লাহর কাছে যেতে পারে না। এই ভ্রান্ত বিশ্বাসের কারণে আজ অনেক মানুষ মাজারে গিয়ে মৃত কিংবা জীবিত পীরের কাছে দু‘আ করে, তাদেরকে সাজদা করে, তাদের নামে পশু জবাই করে, মানত মানে ইত্যাদি। এছাড়াও আরো এমন অনেক কাজ করে, যা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য শোভনীয় নয়। এর মাধ্যমে তারা সুস্পষ্ট শিরকের মধ্যে লিপ্ত হচ্ছে। আল্লাহ রব্বুল আলামীন অনুগ্রহ করে মানবজাতিকে এসব শিরক ও গায়রুল্লাহর (আল্লাহ ছাড়া অন্যের) উপাসনা থেকে ফিরিয়ে শুধুমাত্র তারই ইবাদতের দিকে আহ্বান করার জন্য যুগে যুগে অসংখ্য নবী ও রাসুল প্রেরণ করেছেন। (আন নাহল : ৩৬)। তাদের কথা বিশ্বাস করে কেউ সত্য পথে ফিরে এসে সফলকাম হয়েছে। এরা হল নবী রাসুলদের অনুসারীগণ। আবার কেউ অবিশ্বাস করে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত হল পৃথিবীর ইতিহাসের সকল ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতি, মক্কার কাফির সম্প্রদায় এবং যারা দ্বীনে ইসলামে বিশ্বাস করে না। তৃতীয় প্রকার নিয়েও রয়েছে বিস্তর মতভেদ। তবে তা শুধুমাত্র ইসলামের দাবিদারদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। অর্থাৎ, আল্লাহ তা‘আলার নাম ও গুণাবলির ব্যাপারে যারা মতভেদ করে গোমরাহীতে নিপতিত হয়েছে, তারা সবাই মূলত ইসলামের দাবিদার। তারা সবাই নিজেদের মুসলিম মনে করে। যেমন; জাহমিয়্যা, কদারিয়্যা, মুতাযিলা, মুশাব্বিহা, মুয়াত্তিলা ইত্যাদি দলসমূহ। তারা সবাই মনে করে ‘তারা মুসলিম’। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলার নাম ও গুণাবলিকে ব্যাখ্যা (তাহরীফ), নিষ্ক্রিয়করণ (তা’তীল), সাদৃশ্য (তাশবীহ) ও স্বরূপ বা পদ্ধতি বর্ণনা (তাক‘য়ীফ) করার মাধ্যমে তারা আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের অনুসৃত সহজ সরল পথ থেকে পথ থেকে দূরে সরে গেছে। উল্লিখিত তিনটি বিষয়ে লেখক কুরআন ও সুন্নাহ থেকে দলীলের মাধ্যমে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের অবস্থান ¯পষ্ট করার প্রয়াস পেয়েছেন। সেইসাথে ভ্রান্ত আকীদাহ লালনকারীদের সকল যুক্তি বাতিল প্রমাণ করেছেন। আল্লাহ রব্বুল আলামীন আমাদের সবাইকে তার দেয়া সঠিক দ্বীন সঠিকভাবে বুঝে তদানুযায়ী আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন!
Sale!
শিরক ও কুফর থেকে পরিত্রাণের উপায়
Original price was: 75.00৳ .59.00৳ Current price is: 59.00৳ .
- লেখক: আহমাদ ইবনু হাজার আলে বুতামী
- অনুবাদক: আব্দুল বারী বিন সোলায়মান
- কভারের ধরণ: পেপারব্যাক
- পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৯৬
- বিষয়বস্তু: শিরক-কুফর
- প্রকাশনী: ওয়াহীদিয়া প্রকাশনী
- একটু পড়ে দেখুন
Weight: 120 g